en

বিদ্রোহী কবি কাজী নজরুল ইসলামের জীবনী, কবিতা এবং গ্রন্থসমূহ

দুর্গম গিরি, কান্তার-মরু, দুস্তর পারাবার লঙ্ঘিতে হবে রাত্রি-নিশীথে, যাত্রীরা হুশিয়ার! বাংলা সাহিত্যের অন্যতম শ্রেষ্ঠ কবি কাজী নজরুল ইসলাম। নজরুলের লেখনীতে ফুটে উঠেছে মাজলুমানের অত্যাচারের বিরুদ্ধে জেগে উঠার উদাত্ত আহ্বান। তার কবিতা, গান, গল্প এবং তার সমগ্র জীবন দিয়ে অন্যায়ের বিরুদ্ধে বিদ্রোহ করে গিয়েছেন। কাজী নজরুল ইসলাম ছিলেন রণাঙ্গনের বীর যোদ্ধা। কবি কাজী নজরুল ইসলাম দ্বিতীয় বিশ্ব যুদ্ধের সময় সেনাবাহিনীর বাঙ্গালি প্লাটুনের সৈনিক ছিলেন।ছোট সময় থেকে কষ্টের সাথে তার গভীর বন্ধুত্ব ছিল। তার জীবনের দুঃখের প্রাচুর্যের কারনে তাকে দুখু মিয়া বলা হত। সমাজের ধনী দারিদ্র্যের বৈষম্য এবং সমকালীন নানা অত্যাচার নিপীড়ন তাকে দারুণভাবে প্রভাবিত করেছিল যার প্রমান পাওয়া গিয়ছে তার লেখনীর মাধ্যমে।

তার লেখনীর মধ্যে ফুটে উঠেছে তার মনের অনুভুতি "বিদ্রোহী রণক্লান্ত সেই দিন আমি হব শান্ত, যবে বাতাসে ধ্বনিবেনা উৎপীড়িতের ক্রন্দনরোল" সহ আরও অনেক লেখনীর মাধ্যমে।

বাংলাদেশের জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলাম ১৮৯৯ সালের ২৪ মে পশ্চিমবঙ্গের বর্ধমান জেলার আসানসোল মহকুমার চুরুলিয়া গ্রামের এক দরিদ্র মুসলিম পরিবারে জন্মগ্রহণ করেন। তার বাবা ফকির আহমেদ এবং মাতা জায়েদা খাতুন।

কাজী নজরুলের জীবনের প্রথম পর্যায় শুরু হয় ইসলামি শিক্ষার মাধ্যমে। তিনি কিছুদিন মসজিদের মুয়াজ্জিন হিসেবেও কাজ করেছেন। নজরুলের বর্ণাঢ্য জীবনে অনেক পেশার মাধ্যমে অন্যায়ের বিরুদ্ধে লড়ায় করেছেন।

নজরুল স্থানীয় মক্তব থেকে কুরয়ান,ধর্ম, ইসলাম, দর্শন এবং ইসলামী ধর্মতত্ত্ব অধ্যয়ন শুরু করেন। ১৯০৮ সালে পিতার মৃত্যুর পর ৯ বছর বয়সে তার শিক্ষাজীবন বাধাগ্রস্ত হয়। দশ বছর বয়সে মক্তব থেকে নিম্ন মাধ্যমিক পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হয়ে এই মক্তবে শিক্ষকতার পাশাপাশি মসজিদে মুয়াজ্জিনের কাজ করেন।

কৈশোরে বিভিন্ন থিয়েটার দলের সাথে কাজ করতে গিয়ে কাজী নজরুল ইসলাম কবিতা, নাটক এবং সাহিত্য সম্পর্কে বিশদ জ্ঞান লাভ করেন। তারপর আসানসোলে এসে এক রুটির দোকানে কাজ নেন, এখানে সময় পেলে তিনি সুর করে পুথি পড়তেন।

কাজী রফিজউদ্দিন নামে আসানসোলের দারোগা নজরুলের প্রতিভা দেখে তাঁকে ময়মনসিংহের দরিরামপুর স্কুলে ভর্তি করিয়ে দেন। তিন বছর পর তিনি সেখান থেকে পালিয়ে যান। এরপর ১৯১৭ সালের শেষ দিকে নজরুল ভারতীয় সেনাবাহিনীতে সৈনিক হিসেবে যোগ দেওয়ার পর প্রথম বিশ্বযুদ্ধে অংশ নেন।

আড়াই বছর চাকরি করার পর ১৯২০ সালে ৪৯ বেঙ্গল রেজিমেন্ট ভেঙে দিলে তিনি সৈনিক জীবন ত্যাগ করেন। আমাদের বিদ্রোহী কবি সৈনিক জীবনে থাকাকালে অনেক কবিতা ও গল্প লিখেছেন। তার মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলো - মুক্তি কবিতা, গল্পের মধ্যে - হেনা, ঘুমের ঘোরে, মেহের নেগার,কবিতা সমাধি ইত্যাদি।

সেনাবাহিনীতে কিছুদিন কাজ করার পর আমাদের জাতীয় কবি সাংবাদিকতাকে পেশা হিসেবে গ্রহণ করেন। এই সময় তিনি বিট্রিশ রাজার বিরুদ্ধে সংগ্রামে অবতীর্ণ হয়ে বিদ্রোহী ও ভাঙ্গার গান কবিতা এবং ধূমকেতুর মতো সাময়িকী প্রকাশ করেন।

জেলে বন্দী থাকার সময় কাজী নজরুল ইসলাম রাজবন্দীর জবাববন্দী প্রবন্ধে সাম্রাজ্যবাদের বিরোধিতা করেন। এছাড়া তিনি লাঙল পত্রিকারও সম্পাদক ছিলেন।

আরও পড়ুন:-

কপিরাইট © ২০১৮ রংতুলি চয়েস ইনফো