en

গণতন্ত্রের ফেরিওয়ালা আমেরিকা ও তার ধূসরদের যত অপকৌশল

গণতন্ত্রের ফেরিওয়ালা আমেরিকা ও তার ধূসররা সারা পৃথিবীতে গণতন্ত্রের নামে তাদের পুতুল শাসকগোষ্ঠী বসিয়েছে কিংবা বিভিন্ন দেশকে সন্ত্রাসীদের মত হুমকি ধমকি আর অবরোধ দিয়েছে। কখনো হয়তো বা কতিপয় কুলাঙ্গার সেনা কর্মকর্তাদের ব্যবহার করে সামরিক অভ্যুত্থান ঘটিয়েছে। উপরে উপরে সাধারন মানুষের সাথে থাকার ভান করে স্বৈরশাসকদের অনবরত সমর্থন দিচ্ছে। কখনো কোন দেশের শাসকগোষ্ঠী তাদের গোলামী না করলে সরলমনা জনগণ ও বিরোধীদের গণতন্ত্রের মিথ্যা বুলি শুনিয়ে গৃহযুদ্ধের দিকে ঠেলে দিচ্ছে। এভাবে একটা জাতিকে নিঃশেষ করে দেয়ার জন্য এই ফেরিওয়ালারা সর্বদা ব্যস্ত।

বিভিন্ন দেশে দেশে নিজেদের সামরিক ঘাঁটি স্থাপন করছে। আন্তর্জাতিক দূতাবাসগুলো থেকে বিভিন্ন দেশের অভ্যন্তরীণ বিষয়ে সর্বদা হস্তক্ষেপ করেই চলছে। তাদের এই অনধিকার চর্চাকে সাপোর্ট দিচ্ছে বিরোধীরা। আর এই প্লাটফর্ম তৈরি করছে ক্ষমতাসীনরা।

আন্তর্জাতিক গণমাধ্যম ব্যবহার করে মিথ্যা অপপ্রচার চালিয়ে জঙ্গিবাদের মত স্পর্শকাতর বিভিন্ন ইস্যু তৈরি করছে এবং তা ছড়িয়ে দিয়ে একশ্রেণীর নির্বোধ মানুষকে উদ্বুদ্ধ করছে। তাছাড়া নিজেদের ক্ষমতা আর সম্রাজ্য টিকিয়ে রাখার জন্য পশ্চিমা অপসংস্কৃতি ছড়িয়ে দিচ্ছে গোটা বিশ্বময়। তাদের প্রণীত নৈতিকতাহীন শুধুমাত্র জ্ঞাননির্ভর ধর্মনিরপেক্ষ শিক্ষাব্যবস্থার প্রসার ঘটাচ্ছে। আর এই সকল কাজে সাহায্য করছি আমরাই!!

সাম্প্রতিক সময়ে গুগল এর অনলাইন বিজ্ঞাপনগুলো লক্ষ করলে দেখে থাকবেন কিভাবে তরুণ প্রজন্মকে নষ্ট করার জন্য বিভিন্ন অশ্লীল বিজ্ঞাপন করে থাকে। বিভিন্ন ডেটিং সাইটের অশ্লীল ব্যানার দেখা যাচ্ছে প্রায় সবকটা ওয়েবসাইটে। এর ব্যাপ্তি কত বিশাল তা ইন্টারনেট ইউজাররা খুব ভালোভাবেই জেনে থাকবেন। এই ধরনের বিজ্ঞাপন কত তরুণের চরিত্র নষ্ট করেছে তা হিসাব করা দুরুহ।

পৃথিবীর ইতিহাসে সর্বপ্রথম পরমাণু অস্ত্র তৈরি করলো আমেরিকা। তারপর প্রথম বিশ্বযুদ্ধে জাপানের উপর তা প্রয়োগ করলো। হিরোশিমা নাগাসাকিতে মানবতার কি করুন অবস্থা করেছে আমেরিকা তা বিশ্ববাসী দেখেছে। বিভিন্ন সময়ে দূরপাল্লার পারমানবিক অস্ত্র তৈরি করে তারাই বিশ্বকে এই আত্মঘাতী অস্ত্র তৈরি করতে উৎসাহিত করলো। এখন অন্য কেউ তৈরি করতে গেলে বাধা দিচ্ছে। তার উপর অবরোধ দিচ্ছে। সাম্প্রতিক সময়ে ইরানের সাথে পারমানবিক সমঝোতা চুক্তি সাক্ষর করে আবার দম্ব ভরে চুক্তি থেকে বের হয়ে গেল। সারা বিশ্বকে উপেক্ষা করে তারা যেকোনো কাজ করতে পারে আর অন্য কোন দেশ নিজেদের অভ্যন্তরীণ বিষয়ে বিভিন্ন সিদ্ধান্ত নিতে গেলে তারা সেখানে হস্তক্ষেপ করছে।

আমেরিকা বোমা মেরে মানুষ হত্যা করছে প্রতিনিয়ত। বিভিন্ন দেশে অহেতুক অনধিকার হস্তক্ষেপ করছে। গণতন্ত্রের নামে বিগত এক শতকে কয়েক কোটি মানুষ হত্যা করেছে ের ফেরিওয়ালারা। তারা নৃশংস হত্যাকাণ্ড চালিয়েছে ভিয়েতনামে। কোরীয় উপদ্বীপে আমেরিকার উন্মাদনা বিশ্ব দেখেছে। বর্তমান সময়ে মধ্যপ্রাচ্যে আমেরিকার যুদ্ধবাজ দ্বিমুখী নীতি আর ইহুদিবাদি ইসরাইলকে অন্ধ সমর্থন দেয়ার কথা জানা নেই এমন মানুষ পাওয়া দুষ্কর।

আমেরিকার এসব কাজে সর্বাত্মক সমর্থন দিয়েছে কিছু ইউরোপীয় মিত্র আর আধুনিকতার দাবীদার ধর্মনিরপেক্ষতাবাদ নামক পশ্চিমা সম্রাজ্যবাদীদের এজেন্ট তৃতীয় বিশ্বের কতিপয় স্বার্থান্ধ মানুষ।

এখন আমেরিকা বাংলাদেশের বিষয়ে বিবৃতি দিয়ে মানুষের বিশ্বাস অর্জনের চেষ্টা করছে। মনে করার কোন কারন নেই যে আমেরিকা বাংলাদেশের মানুষের উপকার চায়। পুঁজিবাদী সম্রাজ্যবাদী আমেরিকা মুখে যতই গণতন্ত্রের বুলি ফুটাক না কেন তাদের কথায় কান দেয়ার কোন যৌক্তিকতা আছে বলে আমি মনে করি না। মানবাধিকারের কথা বলে আমেরিকা পৃথিবীতে প্রত্যক্ষ কিংবা পরোক্ষভাবে সবচেয়ে বেশি মানবাধিকার লঙ্ঘন করেছে এখনো করছে। মূলত আমেরিকা হচ্ছে ভদ্রতার মোড়কে একটি সন্ত্রাসী রাষ্ট্র। প্রতিনিয়ত অন্যদের হুমকি ধমকি দিয়েই যাচ্ছে।

সুতরাং, বাংলাদেশে গনতন্ত্র থাকুক আর না থাকুক পশ্চিমাদের সাথে আতাত করা কারো জন্যই মঙ্গলজনক হবে বলে আমি মনে করি না। তাদের মাথায় সবসময় মানুষের সর্বনাশ করার ধান্দা ঘুরতে থাকে। আমাদের দেশের রাজনীতিবিদের এই ব্যাপারে সতর্ক থাকার জন্য অনুরোধ জানাচ্ছি। দেশকে ভালবাসুন দেশের মানুষের জন্য কাজ করুন। মনে রাখবেন জনগণই হচ্ছে গণতন্ত্রের সবচেয়ে বড় শক্তি। আমেরিকা, ভারত, ফ্রান্স, চীন, ব্রিটেন, রাশিয়া, পাকিস্তান কিংবা অন্য কোন পরাশক্তির সমর্থনে জনগনের ইচ্ছার বিরুদ্ধে ক্ষমতায় থাকা যাবে কিন্তু মানুষের মন থেকে চিরদিনের জন্য মুছে যেতে হবে! এতে কোন সন্দেহ নেই!!!

কপিরাইট © ২০১৮ রংতুলি চয়েস ইনফো