en

জনসংখ্যা সমস্যা নয় সম্পদ তথা উন্নয়নের উৎস

জনসংখ্যা সবসময় যেকোনো দেশের জন্য অভিশাপ হয়না। আমরা যদি পরিকল্পিতভাবে জনসংখ্যাকে কাজে লাগাতে পারি তাহলে জনসংখ্যা দেশের জন্য আশীর্বাদ হয়ে থাকে। আমরা জানি, একটি দেশের অর্থনৈতিক উন্নয়নের অন্যতম শর্ত হলো দক্ষ জনশক্তি। পৃথিবীর বহুদেশে মূলধন ও প্রাকৃতিক সম্পদ থাকলেও জনসম্পদের অভাব থাকায় এসব দেশে দক্ষ জনসম্পদের প্রচুর চাহিদা রয়েছে। এসব দেশে বাংলাদেশ জনসম্পদ রপ্তানি করতে পারলে দেশে বেকারের সংখ্যা কমবে, কর্মসংস্থান বৃদ্ধি পাবে, বৈদেশিক মুদ্রা আয় করা যাবে। মোটকথা, বাংলাদেশ অর্থনৈতিকভাবে সমৃদ্ধ হবে। বাংলাদেশ একটি জনবহুল দেশ। অধিক জনসংখ্যা এদেশের প্রধান সমস্যা। এই অধিক জনসংখ্যা পরিবার, সমাজ, পরিবেশ, স্বাস্থ্য, শিক্ষা প্রভূতির ওপর ক্ষতিকর প্রভাব ফেলছে। অধিক লোকসংখ্যার কারণে আমাদের কৃষি জমি কমে যাচ্ছে, পরিবেশ দূষিত হচ্ছে, বিদেশ থেকে প্রচুর খাদ্য আমদানি করতে হচ্ছে।

এতে করে দেশে বেকারের সংখ্যা বাড়ছে, অপরাধ প্রবণতা বাড়ছে, পরিবেশের ভারসাম্য নষ্ট হচ্ছে, বিভিন্ন প্রাকৃতিক দূর্যোগ বেড়ে যাচ্ছে। তাই আমাদের প্রয়োজন জনসংখ্যা সমস্যার সমাধান করা এবং জনসংখ্যাকে মানব সম্পদে রুপান্তরের উদ্যোগ গ্রহণ করা।

জনসংখ্যা সমস্যার সমাধানঃ অধিক জনসংখ্যা নিয়ন্ত্রণের নিম্নোক্ত উপায় সমূহ হলো -
১)পরিকল্পিত পরিবার গঠন
২) কর্মসংস্থান বৃদ্ধি
৩) শিক্ষার প্রসার ঘটানো
৪) স্বাস্থ্য সেবার উন্নয়ন
৫) খাদ্য উৎপাদন বাড়ানো
৬) সচেতনতা বৃদ্ধি
৭) দক্ষতার উন্নয়ন

জনসংখ্যাকে জনসম্পদে রুপান্তরের উপায়

শিক্ষিত, প্রশিক্ষিত ও নিপুণ কর্মকুশলতার অধিকারী মানবগোষ্ঠীকে দক্ষ জনশক্তি বলে। মানবসম্পদ উন্নয়নের উপায়গুলো হলো -

১) মানবসম্পদ উন্নয়নের মূল উপাদান হচ্ছে শিক্ষা। শিক্ষা ব্যবস্থার ব্যাপক উন্নয়নের মাধ্যমে জনসম্পদে দক্ষ করে তোলা যায়।

২) শ্রমশক্তির দক্ষতা বৃদ্ধির পূর্বশর্ত হলো শিক্ষা, প্রশিক্ষণ ও স্বাস্থ্যসেবা। এগুলোর মাধ্যমে তাদের কর্মদক্ষতা ও গুণগতমান বৃদ্ধি পায়।

৩) সাধারণ শিক্ষার পাশাপাশি কারিগরি শিক্ষার প্রসার ঘটানো। এক্ষেত্রে উৎপাদনমুখী শিক্ষার প্রসার ঘতাতে হবে।

৪) সরকারি ও বেসরকারি সহায়তায় কারিগরি প্রশিক্ষণ কেন্দ্রে বিভিন্ন কাজের প্রশিক্ষণ দেওয়া। যাতে তারা নতুন কোনো শিল্পের বিকাশে সহায়তা করতে পারে।

যেমন যন্ত্রপাতি শিল্প, ক্ষুদ্র ও কুটির শিল্প, ব্লক ও বাটিক, সেলাই প্রশিক্ষণ, কম্পিউটার চালনার প্রশিক্ষণ,মৃৎ শিল্প, হস্তচালিত তাঁত, খেলনা তৈরি, সবজি চাষ,বাঁশ ও বেতের সামগ্রী তৈরি, এমব্রয়ডারি, গবাদি পশু ও হাঁস-মুরগির খামার, ক্যাটারিং ইত্যাদি।

৫) শ্রমশক্তি রপ্তানির মাধ্যমে বৈদেশিক শ্রমবাজার বৃদ্ধি করে।

৬) জনশক্তি সম্পর্কিত সুষ্ঠু পরিকল্পনা প্রণয়ন ও বাস্তবায়ন করে।

৭) জীবন যাত্রার মান বৃদ্ধি করে।

৮) শিল্প- কারখানা স্থাপনের মাধ্যমে কর্মসংস্থানের সুযোগ বৃদ্ধি করে।

কপিরাইট © ২০১৮ রংতুলি চয়েস ইনফো