en

প্রযুক্তির ক্ষতিকারক প্রভাব যা কেড়ে নিচ্ছে আমাদের নৈতিকতা


বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির দিক থেকে আমরা অনেক এগিয়ে যাচ্ছি। প্রযুক্তির একদিকে যেমন ভালো  দিক আছে তেমনি খারাপ দিকও রয়েছে। প্রযুক্তির হাত ধরে পৃথিবী অনেকটা এগিয়ে যাচ্ছে।
প্রযুক্তি আমাদের অনেক কিছু দিয়েছে আবার আমাদের কাছ থেকে নৈতিকতা ও মূল্যবোধে কেড়ে নিয়েছে। কিন্তু এটা নয় যে  প্রযুক্তি ও বিজ্ঞানের অগ্রগতি আমাদের সমাজের জন্য অপ্রয়োজনীয় । সভ্যতার উন্নয়নে তথ্য প্রযুক্তির অবদান অতুলনীয়।  প্রযুক্তির অকল্যাণকর দিকগুলো আমাদের অবস্থান অনেকটা নামিয়ে দিয়েছে। অবশ্য এর জন্য আবিষ্কার ও আবিষ্কারক কোনোটিই অপরাধী বলা যাবে না কোন মতে।  অপরাধী হচ্ছি আমরা যারা  ব্যবহারকারী।

বর্তমানে পৃথিবীর বিপুল মানুষ ইন্টারনেট ব্যবহারের সঙ্গে  যুক্ত আছে।  ফেসবুক ব্যবহারকারীর সংখ্যা  অনেক। প্রতি ১২ সেকেন্ডে একটি করে ফেসবুক অ্যাকাউন্ট খোলা হচ্ছে যেটা বাংলাদেশের জন্মহারের চেয়েও অনেক বেশি। ইদানিং কিছু অপ্রাপ্তবয়স্ক ও নৈতিক জ্ঞানহীন মানুষের হাতে আক্রান্ত হচ্ছে আমাদের তথ্য প্রযুক্তি। অপরাধের একটা বড় অংশ এই সব সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমগুলোকে কেন্দ্র করে গঠিত হয়েছে। মানুষের অনুভূতিকে আঘাত করার  মাধ্যম হিসেবে এখন ব্যবহৃত হচ্ছে বিভিন্ন সামাজিক যোগাযোগ সাইটগুলোকে। কিছু  মানুষেরা প্রযুক্তিকে তাদের ভোগ ও আয়েশের ক্ষেত্র তৈরি করে ফেলেছে। তথ্য বিকৃতি, ব্যক্তিগতভাবে সমাজের কোনো মানুষকে হেয় প্রতিপন্ন করা, প্রতিকৃতির ব্যঙ্গাত্মক উপস্থাপন ইত্যাদি বিষয় সামাজিক মাধ্যমগুলোতে ছড়িয়ে দেওয়া একটি নিত্য  কাজে পরিণত হয়েছে।  কোন ব্যক্তি অথবা প্রতিষ্ঠানের তথ্য ও ছবি চুরি করে ব্ল্যাকমেল করার মতো ঘটনা হয়েই চলছে। অপরাধী চক্র তাদের অপরাধ কর্মকাণ্ড  করার জন্য ইন্টারনেটকে গোপনীয় মাধ্যম হিসেবে বেছে নিয়েছে। একজন ইন্টারনেট ব্যবহারকারী সহজে নিজের পরিচয় গোপন রাখতে পারে বলে কাউকে হুমকি দেওয়া, ভুয়া সম্পর্কের ফাঁদে ফেলে টাকা হাতিয়ে নেওয়া অথবা প্রতিশোধ গ্রহণের উদ্দেশ্য  ব্যক্তিগত অন্তরঙ্গ মুহূর্ত ধারণ করে বিভিন্ন অনলাইন সাইটে ছড়িয়ে দেওয়া এসব কাজ অনায়াসে সম্ভব হচ্ছে।

এ রকম নানা ধরনের অপরাধমূলক কাজ আমাদের সমাজের নানা স্তরে ছড়িয়ে পড়ছে। যার কারণে একটি দেশের নাগরিকদের আর্থিক, সামাজিক ও মানসিক অবক্ষয়ের হার বেড়েই চলছে। এর প্রতিকার হিসেবে ইন্টারনেট ও অনন্য প্রযুক্তি ব্যবহারের ব্যাপারে সামাজিক সচেতনতা বৃদ্ধি করা প্রয়োজন | সাইবার অপরাধের বিরুদ্ধে উপযুক্ত আইন প্রয়োগ ও তার বাস্তবায়নের মাধ্যমে সমস্যা অনেকটা লাঘব করা যেতে পারে | পাশাপাশি পরিবারের ছোটদের  ওপর বড়দের নজর রাখা ও নিয়ন্ত্রণ অনেক গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে।  অবশেষে বিজ্ঞানের আবিষ্কারের সঠিক ও উপযুক্ত ব্যবহারই আমাদের দিতে পারে একটি সুন্দর সমাজ উপহার।

আরও পড়ুন:-

কপিরাইট © ২০১৮ রংতুলি চয়েস ইনফো